কোন ধরনের খামারে In-Farm Slaughterhouse (IFSH) প্রয়োজন এবং কেন প্রয়োজন
In-Farm Slaughterhouse এর প্রয়োজনীয়তা কি তা জানার আগে চলুন জেনে নেই In-Farm Slaughterhouse কি?
In-Farm Slaughterhouse হলো পশুকে জবাই করার স্থান যেখানে মোটাতাজাকরণের পর গরুকে জবাই করে তার মাংস বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করা হয় কিংবা বাজারজাতের জন্য প্যাকেটিং করে হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়। যেসব খামার থেকে নিয়মিত মাংস সরবরাহ করা হয় সেসব খামারে In-Farm Slaughterhouse থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সব ধরনের খামারে In-Farm Slaughterhouse রাখা সম্ভব নয় , রাখার দরকারও নেই । যেমন – যেসব খামারীরা কোরবানির উদ্দেশ্যে গরু মোটাতাজাজরণ ব্যবসা করেন সেসব খামারে In-Farm Slaughterhouse এর কোনো প্রয়োজন নেই।
In-Farm Slaughterhouse এর জন্য যেসব ফার্ম উপযুক্ত তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ হতে পারেঃ
- বড় ধরণের খামার নির্ধারণঃ
In-Farm Slaughterhouse এর জন্য অনেকটা জায়গার দরকার পরে। তাই যেসকল খামার অনেকটা জায়গা জুড়ে প্রস্তুত করা হয় এবং নিত্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি আছে সেসকল খামার এ In-Farm Slaughterhouse করতে পারে। সাধারণত বড় ধরণের খামারে In-Farm Slaughterhouse থাকে। ছোট ছোট খামারে গরু লালন-পালন এবং পরিচালনা করা তুলনামূলক সহজ। আবার বাজেট এবং জায়গা স্বল্পতাও আছে। তাই এসব খামারের জন্য In-Farm Slaughterhouse দরকার পরে না।
- নিয়মিত পশু জবাই করা হয় এধরণের খামার গঠনঃ
In-Farm Slaughterhouse এর উদ্দেশ্যই নিয়মিত মাংস সরবরাহ করে তা বাজারজাত করা। তাই যেসকল খামার শুধুমাত্র কোরবানী কে উদ্দেশ্য করে গরু মোটাতাজকরণ করে না, গরুর মাংস নিয়মিত বাজারজাতের উদ্দেশ্যে ও মোটাতাজাকরণ খামার গঠন করে, তারা In-Farm Slaughterhouse রাখতে পারে। কারণ কোরবানির উদ্দেশ্যে মোটাতাজাকরণ খামার করলে তা একটা নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে বিক্রি করা হয়। খামারে পশু জবাই, মাংস কাঁটাকাঁটি এর দরকার পরে না। তাই In-Farm Slaughterhouse এসব খামারে অপ্রয়োজনীয়।
- দক্ষ লোকবল নিয়োগ করাঃ
In-Farm Slaughterhouse কে নিয়মিত দেখভাল করতে হয় , যার জন্য প্রয়োজন কিছু দক্ষ লোকবল। তা না হলে এটি নির্মাণ করা হবে ঠিকই কিন্তু তার নিয়মিত কার্যক্রমের জন্য খামারীদের হিমসিম খেতে হবে। তাই এটি নির্মাণ করলে সাথে প্রয়োজনীয় ও দক্ষ লোকবলও থাকতে হবে। আলাদা মানুষের ভরনপোষণ এর জন্য বাড়তি টাকা দরকার পরবে। কিন্তু খামার যদি বড় না হয় এবং রোজগার কম আসে তাহলে খামারীদের জন্য এ বাড়তি খরচ লোকসান বয়ে আনবে। তাই বড় মানের খামারে যাদের পশু নিয়মিত জবাই করা হয় এবং মাংসও সংরক্ষণ করেন তাদের দক্ষ লোকবল In-Farm Slaughterhouse এ নিযুক্ত করতে হবে। লোকজন দক্ষ হলে তুলনামূলক অল্প লোকজন’ই তা পরিচালনা করতে পারবে।
- বিক্রয়ের বাজারে দ্রব্যমূল্য যাচাইঃ
In-Farm Slaughterhouse করার আগে ওই এলাকায় মাংসের চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে এবং আশপাশের গ্রোসারী স্টোরের সাথে কথা বলে রাখতে হবে। কারণ একই এলাকায় যদি বেশ কিছু খামার থাকে নিয়মিত মাংস সরবরাহ করার জন্য, তাতে করে বাজারমূল্য কমে যাবে। আবার চাহিদাও তেমন থাকবে না।
- প্যাকেজিং এবং স্টোরেজিং ব্যবস্থাঃ
গরু জবাই এর পরের ধাপ মাংস সরবরাহ এবং তা বাজারজাত করা। যদি সম্পূর্ণ মাংস বিক্রি করা সম্ভব না হয় তবে তা হিমাগার বা বিভিন্ন উপায়ে সংরক্ষণ করা হয়। কারণ মাংস পচনশীল। তাই সময়মতো সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করলে খুব শীঘ্রই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার প্যাকেজিং এবং স্টোরেজিং এর জন্য আলাদা জিনিসপত্র এর প্রয়োজন যা ক্ষুদ্র খামারিদের জন্য কেনা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই ক্ষুদ্র খামারী এবং অল্প জায়গা সংবলিত খামারে In-Farm Slaughterhouse না থাকাই যুক্তিযুক্ত ।
In-Farm Slaughterhouse গঠনের পূর্বে তার পুরোপুরি প্রয়োগ এবং পরিচালনা ব্যবস্থা ঠিকভাবে সম্ভব কিনা তা অবশ্যই খামারিদের বিবেচনায় রাখতে হবে। একদিকে এর গঠন যেমন কাজ কে সহজ করে দেয় তেমনি ব্যয়বহুল ও। তাই সর্বোপরি বিবেচনা করে In-Farm Slaughterhouse গঠন করতে হবে।