সঠিকভাবে খাদ্যের যোগান- খামারিদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব
জীবিকা নির্বাহের জন্য আমরা মনুষ্যকূল যেমন প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে খাদ্যদ্রব্যের উপর নির্ভরশীল, তেমনি নিরীহ পশু-পাখিও। তাই খামারিদের যে ব্যাপারটি সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে তা হলো সঠিকভাবে খাদ্যের যোগান দেয়া। অন্যথায় গবাদিপশু গুলো অপুষ্টির শিকার হবে, রোগবালাই লেগেই থাকবে এবং ব্যবসায় সফল হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কমেও যাবে।
খামারিদের গবাদিপশুর সঠিকভাবে খাদ্যের যোগান দেয়ার জন্য কিছু বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করা অনেক জরুরী। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানাতেই আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু “সঠিকভাবে খাদ্যের যোগান”- খামারিদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আসুন জেনে নেই কি কি বিষয় বিবেচনায় রাখলে খামারিরা সঠিকভাবে খাদ্যের যোগান দিতে সক্ষম হবে –
১) খামারের অবস্থানঃ শুরুতেই যে বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে তা হল খামারটি যে স্থানে তৈরী করা হয়েছে সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন, তাৎক্ষণিক অবস্থাতেও খাবার সরবরাহ করা যাবে কি না। ডেইরী খামারের অবস্থান এমন হওয়া উচিত যাতে সহজেই খাবার সরবরাহ করা যায় ।
২) খাবারের মানঃ ভালো মানের খাবার পাওয়া যায় না এমন জায়গা বা দোকান থেকে গবাদি পশুর খাবার না কেনাই উত্তম। কারণ খাবারের মান খারাপ হলে একদিকে যেমন পশু শুকিয়ে যেতে পারে, অন্যদিকে দুগ্ধ সরবরাহের মানও হ্রাস পাবে।
৩) খাদ্য গুদামজাতকরণঃ গবাদি পশুর জাব কেনার পরে সেটাকে সঠিক ভাবে সরবরাহ করা উচিত। দানাদার জাতীয় খাবারে ( ভুষি, তিলের খৈল ইত্যাদি ) দ্রুত জীবাণু আক্রমণ করে। তাই গুদামঘরে সঠিক তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে যাতে খাদ্যদ্রব্য সুরক্ষিত থাকে।
৪) সংরক্ষণঃ ঘাস ও দানাদার খাদ্য আলাদা ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা যে কোনো তত্ক্ষণাত প্রয়োজনের জন্য ঘাস কে সাইলেজ করে রেখে দিতে হবে, অথবা খড় জাতীয় খাদ্য সংগ্রহে রাখতে হবে।
৫) কীটনাশক ব্যবহারঃ খামারে ইঁদুর, তেলাপোকা,বেজি ইত্যাদির উপদ্রব বেড়ে গেলে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নতুবা এরা খাদ্যদ্রব্যকে নষ্ট করবে। কিন্তু কীটনাশক ব্যবহারের আগে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যাতে তা পশুর নাগালের বাইরে থাকে।
আশা করছি উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা খামারিরা সঠিকভাবে গবাদিপশুর খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছেন এবং খাদ্য জোগান দিতে উপকৃত হবেন ।