মোটাতাজাকরণ গরুর টিকা দেয়ার তালিকা

Published by Khamar-e Agro Research Team on

 

বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রোগ এড়াতে পশুকে নিয়মিত টিকা দেয়া আবশ্যক। যেমন: তড়কা, বাদলা, ক্ষুরারোগ, গলা ফুলা, রিন্ডারপেস্ট, জলাতঙ্ক ইত্যাদি কঠিন কঠিন রোগ নিয়মিত টিকা দেয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু কোন টিকা কখন দিতে হবে এবং কতোদিন পর পর দিলে তা পশুর শরীরে সহনীয় হবে তার একটা সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। গরুর সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনে টিকা দেয়ার খুটিনাটি তথ্য নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা “গরুর টিকা দেয়ার তালিকা”। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক –

 

  • গরুকে জন্মের পর কোন টিকা দেওয়া না থাকলে ক্রয় করার ৭ দিন পর থেকে বিভিন্ন ধরনের টিকা ১৫ দিন পর পর দিতে হবে। 
  • নিম্নে বর্ণিত টিকা প্রাণিকে প্রয়োগ করতে হয় যেমন- তড়কা, ক্ষুরা, বাদলা, গলাফুলা ইত্যাদি। এ টিকা গুলো নিয়মিত প্রদান করলে গরু বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে। 
  • যদি সময় অনেক কম থাকে সেক্ষেত্রে গরুকে কমপক্ষে ২টি টিকা অবশ্যই দিতে হবে। একটি হল তড়কা রোগ ও অপরটি হলো ক্ষুরা রোগের টিকা। কিন্তু হাতে সময় থাকলে তড়কা ও ক্ষুরা রোগের পাশাপাশি বাদলা এবং গলাফুলা রোগের টিকাও অবশ্যই প্রদান করতে হবে। 

 

টিকা দেয়ার নিয়ম-কানুনঃ-

  টিকা দেয়ার নিয়ম   সময়সীমা 
  • তড়কা রোগঃ তড়কা রোগের ভ্যাকসিন ১ মিলি চামড়ার নীচে দিতে হবে। 
  • ক্ষুরা রোগঃ এ রোগের টিকায় বিভিন্ন স্ট্রেন মিশ্রিত করতে হয়।  তাই প্রস্তত কারকের নির্দেশ মোতাবেক ;যেমন- সরকারি মহাখালী প্রাণিসম্পদ গবেষণাগার হতে তৈরি ভ্যাকসিন ১টি স্ট্রেন দ্বারা হলে ৩ সিসি এবং ২টি স্ট্রেন দ্বারা তৈরি হলে ৬ সিসি চামড়ার নীচে দিতে হবে। এছাড়া বিদেশী পশু হলে স্ট্রেন ও প্রস্তুত কারকের নির্দেশ মোতাবেক এটি সাধারণত ৫ সিসি বা ২ সিসি চামড়ার নীচে দিতে হয়।

 

    • বাদলা রোগঃ এ রোগের টিকা ১০০ মিলি বোতলে থাকে। সরবরাহের পর প্রয়োজনমতো পশুকে প্রদান করতে হয়।

  • গলাফুলা রোগঃ ১০০ মিলি কাঁচের বোতলে গলাফুলা রোগের টিকা সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে চাহিদা মোতাবেক পশুকে টিকা দেয়া হয়ে থাকে। 
  • বছরে একবার

  • তড়কা ভ্যাকসিন দেয়ার ১০-১৬ দিন পর ঋ.গ.উ ভ্যাকসিন দিতে হবে। ঋ.গ.উ ভ্যাকসিন ঋ.গ.উ ভ্যাকসিন প্রতি ৪ মাস পর পর দেওয়ার নিয়ম।



  • ৬ মাস পর পর বছরে দু’বার

  • ৬ মাস পর পর বছরে দু’বার

 

কেন তড়কা এবং ক্ষুরা রোগের টিকা এতোটা গুরুত্বপূর্ণ? 

তড়কা একটি মারাত্মক রোগ। সময়মত তড়কা রোগের টিকা প্রদান করা না হলে যে কোন সময় প্রাণি মারা যেতে পারে। এ রোগের ভয়াবহতা অত্যন্ত বেশি। আক্রান্ত হওয়ার পরপরই প্রাণি মারা যায়। তাই সহজে আক্রান্ত প্রাণির চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায় না । এছাড়া ক্ষুরা রোগ ও একটি মারাত্মক রোগ। যদিও এ রোগে বড় প্রাণি মারা যায় না তথাপি এ রোগে প্রাণির ওজন এত কমে যায় অর্থাৎ দুর্বল হয়ে পড়ে যে ৬ মাসে সেই পূর্বের অবস্থায় প্রাণির স্বাস্থ্য ফিরে আসে না এবং শরীরে ৬ মাস পর্যন্ত এ রোগের জীবাণু বসবাস করে। যা গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসার জন্য অলাভজনক। 

 

পশুকে রোগমুক্ত রাখতে নিয়মিত টিকা প্রদানের কোন বিকল্প নেই। আবার নিয়মিত টিকা সেবন পশুর মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। তাই খামারীদের বিভিন্ন বড় বড় রোগ ব্যধি থেকে পশুদের রক্ষা করতে টিকা সেবনের প্রতি যত্নবান ও দায়িত্বশীল হতে হবে।