ইউ.এম.এস. পদ্ধতিতে খড়কে সাইলেজে প্রক্রিয়াজাতকরণ

Published by Khamar-e Agro Research Team on

ইউ.এম.এস. এমন একটি খাদ্যদ্রব্য যা খামারীরা সহজেই জোগান দিতে পারে, দামেও সাশ্রয়ী আবার কোনো রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই প্রাণির দৈহিক ওজন বৃদ্ধি তথা প্রাণিকে মাংসল করে তোলে। ইউ.এম.এস. বিভিন্ন দ্রব্যের সংমিশ্রণে তৈরি একটি পন্য। এর সাথে খড় মিশ্রিত করলে তার কার্যকারীতা বহুগুণে বেড়ে যায়। কিন্তু একটা নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রণ টি তৈরি করতে হবে। যা নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো-

 

ইউ.এম.এস. এ খড়কে সাইলেজে প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতিঃ

👉 শুরুতে আসে নির্দিষ্ট অনুপাত অনুযায়ী দ্রব্য গ্রহণ। এক্ষেত্রে মোট খড়ের ওজনের শতকরা ৫ ভাগ ইউরিয়া নিতে হবে। এরপর খড়ের ওজনের সমপরিমাণ পানির সাথে ভালভাবে ইউরিয়াটুকু মেশানোর পর মিশ্রিত পানি খড়ের সাথে সমভাবে ছিটিয়ে মেশাতে হবে। উদাহরণস্বরুপ প্রতি ১০০ কেজি খড়ের সাথে ৫ কেজি পরিমাণ ইউরিয়া সার১০০ লিটার পানির মিশ্রণ তৈরী করতে হবে ।

👉 ইউরিয়া মিশ্রিত পানি ও খড় সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় কোন পাত্রে অথবা মাটির গর্তে ৭-১০ দিন পলিথিন, চট ইত্যাদি দিয়ে ঢেকে চাপা দিয়ে রাখতে হবে। যাতে কোনো ক্রমেই মিশ্রণটি বাইরের বাতাস বা বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে না আসতে পারে । 

👉 ইউরিয়া খড়ের মিশ্রণটি এভাবে ৭-১০ দিন সম্পূর্ন  আবদ্ধ অবস্থায় রাখার পর গবাদি পশুকে খাড়য়ানোর উপযোগী হয়ে ওঠে। 

👉 পশু প্রাথমিকভাবে  প্রক্রিয়াজাত খড় খেতে সামান্য আপত্তি করতে পারে। কিন্তু প্রথম ২-১ দিন খাওয়ানোর পর সম্পূর্ণ অভ্যস্ত হয়ে যায়। 

👉 ৭-১০ দিন সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় থাকলে খড় নরম ও সহজ পাচ্য হয় এবং ইউরিয়া হতে অ্যাামোনিয়া নির্গত হয়ে খড়ের সাথে মিশে যায়। কিন্তু সৃষ্ট অ্যামোনিয়া মোটেই প্রাণির জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং অ্যামোনিয়া গবাদি পশুর পাকস্থলীতে বসবাসকারী কীট বা মাইক্রোফ্লোরাকে আমিষ জাতীয় খাদ্যে রূপান্তরিত করে পশুর আমিষ জাতীয় খাদ্য ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। 

👉 বন্যা মুক্ত স্থানে পাশাপাশি ২টি ১ মিটার ব্যাস ( ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি)১ মিটার গভীর (সামান্য ঢালু রেখে) মাটিতে গর্ত  করে নীচের দিকটা ভাল করে পিটিয়ে দরমুজ করে সমান করে নিয়ে ২ ইঞ্চি (বালি খোয়া ও সিমেন্টের মিশ্রণ দিয়ে) ঢালাই করে নিতে হবে ববং গর্তের পাশে ১ ইঞ্চি প্লাস্টার ও উপরের অংশে ১ মিটার ব্যাসের রিং ফরমা বসিয়ে মাটির উপরে জেগে থাকা অংশ (৪ ইঞ্চি – ৬ ইঞ্চি) 

সিমেন্ট,বালি ও খোয়ার মিশ্রণ দিয়ে নকশা অনুযায়ী ঢালার করে শক্তিশালী করতে হবে যাতে কাজের সময় গর্তের  উঠানামা করাতে ভেঙ্গে না যায়। পরিশেষে গর্তের ভিতরের অংশের দেওয়াল ও মেঝে সিমেন্ট পানির প্রতিবারে আনুমানিক ৬০-৭০ কেজি খড় প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব।  এক্ষেত্রে সাধারণত এমন ২টি গর্তের প্রয়োজন হয়।

সাইলেজ পিট

সাইলেজ পিট

এটি গরুকে মোটাতাজা করণে অনেক উপকৃত একটি পদ্ধতি হলেও এর কিছু বিধিনিষেধ আছে। যেমনঃ ৬ মাস বয়সের ছোট বাছুর, গর্ভবতী গাভী, অ্যালার্জীর সমস্যা বা পেটে সহ্য করতে পারে না এমন পশুকে সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে আর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। 

সাইলেজকৃত খড়

সাইলেজকৃত খড়