গবাদিপশুকে টিকা
বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ রোগ এড়াতে পশুকে নিয়মিত টিকা দেয়া আবশ্যক। যেমন: তড়কা, বাদলা, ক্ষুরারোগ, গলা ফুলা, রিন্ডারপেস্ট, জলাতঙ্ক ইত্যাদি কঠিন কঠিন রোগ নিয়মিত টিকা দেয়ায় নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু কোন টিকা কখন দিতে হবে এবং কতোদিন পর পর দিলে তা পশুর শরীরে সহনীয় হবে তার একটা সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। গরুর সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনে টিকা দেয়ার খুটিনাটি তথ্য নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা “গরুর টিকা দেয়ার তালিকা” –
টিকার তালিকা জানার আগে আমাদের এর সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কে জানতে হবে। টিকার সঠিক ব্যবহারের জন্য যে বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখতে হবে তা হলোঃ
১। ভ্যাকসিন সংরক্ষণের সময় এর যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ ঠান্ডা স্থানে ভ্যাকসিনের গুনগত মান যথাযথ ভাবে বজায় থাকে।
২। ভ্যাকসিনের শিশি বা ভায়াল কখনোই সরাসরি সূর্যালোকের সংস্পর্শে রাখা যাবে না। কারণ সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে এর গুণগত মান নষ্ট হতে পারে এবং তা পশুর শরীরে প্রবেশ করালে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
৩। সকালে অথবা সন্ধ্যায় যখন সূর্যের আলোর তীব্রতা কম থাকে তখনই টিকা প্রদান কর্মসূচি শুরু করতে হবে।
৪। সূর্যের আলোর সংস্পর্শ এড়িয়ে প্রস্তুতকারক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশ মতো টিকা তৈরি করতে হবে। এতে করে টিকার গুনগত মান যথাযথ ভাবে বজায় রাখা সম্ভব হয়।
৫। টিকা গোলানোর পর অতিদ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে বসে সঠিক পদ্ধতিতে ও সঠিক মাত্রায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে পশুর শরীরে টিকার প্রয়োগ করা উচিত।
৬। অসুস্থ গবাদি প্রাণি ও হাঁস-মুরগিকে কখনোই টিকা প্রদান করা উচিত নয়। কারণ টিকা দেয়া হয় নির্দিষ্ট রোগ ব্যাধি থেকে পশুকে রক্ষা করতে এবং সে রোগের বিরুদ্ধে পশুর শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য । কিন্তু রোগাক্রান্তের পর প্রাণিকে টিকা প্রদান করলে তা আর কাজে আসে না বরং বিপরীত ক্রিয়া ঘটাতে পারে।
৭। শীতকালে ভ্যাকসিন তৈরির ২ ঘন্টা ও গ্রীষ্মকালে ১ ঘন্টার ভিতর পশুর শরীরে প্রয়োগ করতে হয়। টিকা প্রদানে বিলম্ব হলে গোলানো টিকার পাত্রের পাশে কিছুক্ষণ পর পর ঠান্ডা পানি অথবা বরফের টুকরা রাখতে হবে। যাতে এর গুনগত মান অক্ষুণ্ণ থাকে।
পশুকে টিকা প্রদানের জন্য নিম্নে বর্ণিত তালিকাটি বিবেচনায় রাখতে হবে –
পশুকে রোগমুক্ত রাখতে নিয়মিত টিকা প্রদানের কোন বিকল্প নেই। আবার নিয়মিত টিকা সেবন পশুর মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। তাই খামারীদের বিভিন্ন বড় বড় রোগ ব্যধি থেকে পশুদের রক্ষা করতে টিকা সেবনের প্রতি যত্নবান ও দায়িত্বশীল হতে হবে।