পেট ফাঁপা রোগ (Tympanitis)
পেট ফাঁপা কী?
অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস কিংবা অতিরিক্ত ভোজনের জন্য যদি গরুর হজম ক্রিয়া হ্রাস পায় এবং পেট ফুলে যায় তাহলে তাকে সচরাচর পেট ফাঁপা বলে। মানুষ, গরু, ছাগল সহ বিভিন্ন প্রাণিতে এ রোগ দেখা দেয়। আজকের আলোচনায় এ রোগের বিস্তার, লক্ষণ এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেবো-
কীভাবে এ রােগের বিস্তার ঘটে তা নিচের ছকে বর্ণনা করা হলোঃ
১। অধিকমাত্রায় ঘাস, খাদ্য বা পানি খেলে গরুর সচরাচর এই রােগ হয়ে থাকে ।
২। অনেকদিন খরা হওয়ার পর হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ার পর মাঠে ঘাটে কচি ঘাস দেখা যায় তা। কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে। সেই ঘাস যদি প্রাণি অধিক পরিমাণে খায় তাহলে এই রােগে আক্রান্ত হতে পারে । ৩। যে সমস্ত প্রাণি খেসারীর ভূষি, মাসকালাইয়ের ভূষির সাথে প্রচুর পরিমাণ পানি খায় তাদের পেট অতিরিক্ত ভর্তির ফলে এই রােগ হয়। ৪। যে জমিতে ইউরিয়া সার সদ্য ব্যবহার করা হয়েছে, সেই জমির ঘাস খেলে এই রােগ হয়। ৫। গলায় কােন জিনিস/খাদ্য আটকিয়ে গেলে, অসাধারণ খাদ্য বেশি পরিমাণে খেলে এ রােগ হয়। |
পেট ফাঁপা রােগের লক্ষণ সমূহঃ
১। পেটের ভিতরে গ্যাস জমা হওয়ার ফলে পেট ফুলে যায়।
২। পেট ফুলে যাওয়ার সাথে সাথে প্রাণির অস্থিরতা ও চঞ্চলতা বৃদ্ধি পায়। ৩। পেট ব্যাথার জন্য অনেক প্রাণি প্রায়ই মাটিতে শােয় ও উঠে। ৪। অনেক সময় পিছনের পা দিয়ে প্রাণি পেটে লাথি মারতে থাকে। ৫। প্রাণি খুব ঘন ঘন শ্বাস নেয়। ৬। জিহবা বের হয়ে যায় এবং মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে। ৭ নিঃশ্বাসের গতি খুব বেশি হয় এবং হৃদস্পন্দন খুব বেড়ে যায়। ৮। পেটের বাম পার্শ্বে থাপ্পড় দিলে ধপ ধপ শব্দ করে। ৯। প্রাণির খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১০। প্রাণির পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। ১১। ঐ ক্ষেত্রে পশুর জ্বর থাকে না। |
রােগের প্রতিকার ব্যবস্থাঃ সর্দিকাশির মতোই পেট ফাঁপা অনেক সাধারণ একটা রোগ। কিন্তু তবুও রোগবালাই কারোই কাম্য নয়। যদি গরুর এ রোগ দেখা দেয় তাহলে যা যা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা হলোঃ
✅ প্রাণির খাদ্য সরবরাহের বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।
✅ সময়মত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
গবাদিপশুর পেট ফাঁপা অনেক সাধারণ একটা রোগ। এ রোগে গরুর মারাত্মক কোন ক্ষতি না হলেও স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। তাই রোগ নিরাময়ে জন্য সময়মত চিকিৎসা সেবা দিতে হবে এবং গরু যাতে পেট ফাঁপায় আক্রান্ত না হয় সেদিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে।