পরজীবী

Published by Khamar-e Agro Research Team on

 

পরজীবী হল একটি জীব, যে আশ্রয়দাতা বা হোস্ট নামে পরিচিত অন্য প্রাণীর উপর বা তার অভ্যন্তরে বসবাস করে।

সচরাচর দুই রকমের পরজীবী দেখা যায়। যথাঃ

১। বহিঃ পরজীবী। 

২। অন্তঃ পরজীবী। 

 

বহিঃ পরজীবী  যে পরজীবী অন্য প্রাণির শরীরের বাহ্যিক অংশে বসবাস করে তাকে বহিঃ পরজীবী বলে। যেমনঃ উকুন,আঁটুলি, মাইট ইত্যাদি । 

অন্তঃপরজীবী যে পরজীবী অন্য প্রাণির শরীরের অভ্যন্তরে বসবাস করে তাকে অন্তঃপরজীবি বলে। যেমনঃ পাকান্ত্রিক গোলকৃমি, Stephanofilaria assamensi, পাতাকৃমি, ফিতাকৃমি ইত্যাদি। 

 

আলোচনার এ পর্যায়ে চলুন জেনে নেই বহিঃ পরজীবি এবং অন্তঃ পরজীবির লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে –

 

বহিঃ পরজীবী আক্রান্তের লক্ষণঃ

১) দেহত্বকের লোম উস্কো খুস্কো হয়ে যায়, অনেক সময় লোম ঝরে ঝরে যায় ।

২) প্রাণির ত্বকে প্রচন্ড চুলকানি হয়। এক পর্যায়ে প্রাণি চুলকানির জন্য শক্ত বস্তুর সাথে শরীর ঘষে । ফলে অনেক সময় চামড়া উঠে রক্ত বের হয়ে আসে ।

৩) আক্রান্ত প্রাণির  স্বভাবে এক ধরণের অস্থিরতা প্রকাশ করে ।

৪) প্রাণির শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পায় ।

৫) রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয় ।

৬) ক্ষুধামন্দা ভাব দেখা দেয় ।

গরুর বহিঃপরজীবী রোগ

গরুর বহিঃপরজীবী রোগ

প্রতিরোধ ও চিকিৎসাঃ

১)  যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। 

২) রোগাক্রান্ত হলে কীটনাশক ঔষধ কোম্পানির নির্দেশমত ব্যবহার করতে হবে। 

৩) কীটনাশক জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করলে ব্যাবহারের পূর্বে ও পরে পশুকে কিছু খাওয়ানো যাবে না । 

৪) ঔষধ ব্যবহারের ২ ঘন্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে সমস্ত  শরীর ধুয়ে দিতে হবে। 

 

অন্তঃপরজীবী আক্রান্তের লক্ষণঃ 

১) আক্রান্ত প্রাণির ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। 

২) ক্ষুধামন্দা ভাব বা লক্ষণ প্রকাশ পায়।  

৩) পশুটি ধীরে ধীরে ভগ্নস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।  

৪) বাড়ন্ত প্রাণির শারীরিক বৃদ্ধি কমে যায়। এক পর্যায়ে বন্ধ হয়। 

৫) বয়স্ক প্রাণির উৎপাদন ক্ষমতা  কমে যায়। 

৬) প্রাণির শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা যায়। 

গরুর  অন্তঃপরজীবী রোগ

গরুর অন্তঃপরজীবী রোগ

চিকিৎসাঃ

১) কৃমির মাধ্যমিক পোষক ধ্বংস যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধ্বংস করতে হবে। 

২) প্রাণিকে গোয়াল ঘরে আলাদা রাখতে হবে।  

৩) আশপাশের জায়গা ও চারণভূমি পরিষ্কার রাখতে হবে। যাতে নোংরা পরিবেশে রোগ বিস্তার করতে না পারে। 

৪) গোয়াল ঘরে নিয়মিত চুন ব্যবহার করতে হবে  

৫) জলাবদ্ধ জমিতে প্রাণি কে চরানো যাবে না। রোগের সংক্রমণ থেকে প্রাণিকে মুক্ত রাখতে হবে ।