ম্যাসটাইটিস বা ওলান প্রদাহ
ম্যাসটাইটিস বা ওলান প্রদাহ মূলত গাভীর ওলানে সৃষ্ট সমস্যা কে বোঝায়। এটি একটি সংক্রামক ব্যাধি। এ রোগে গাভীর ওলানে জ্বালাপোড়া সহ ব্যথা অনুভূত হয়। গাভীর দুধ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে।
আজকে আমরা গাভীর ওলান প্রদাহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আলোচনার বিষয়বস্তুতে যা যা থাকছে-
- ওলান প্রদাহের কারণ
- রোগের লক্ষণ
- প্রতিকার এবং
- চিকিৎসা সেবা।
ওলান প্রদাহের কারণঃ
গাভীর ওলান Streptococcus genus (স্ট্রেপ্টোকক্কাস জেনাস) নামক ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস ও মাইক্রোপ্লাজমা দ্বারা আক্রান্ত হলে ওলান প্রদাহ নামক সংক্রামক ব্যাধি হয়ে থাকে । এছাড়াও এর অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে –
১. অস্বাস্থ্যকর স্যাঁতস্যাঁতে বাসস্থানে গাভী বসবাস করলে ওলান প্রদাহ হয়ে থাকে।
২. খামারীরা যদি ময়লা হাতে গাভীর দুধ দোহন করে তাহলে তা থেকে ওলানে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ কিংবা ফাংগাল ইনফেকশন তথা ওলান প্রদাহ হতে পারে।
৩. বাঁটে বা ওলানে কোনো ভাবে আঘাত লাগলে ওলান প্রদাহ হয়ে থাকে।
৪. ওলানে দুধ জমাট বেঁধে থাকা ইত্যাদি কারণে রোগজীবাণু সংক্রমিত হয়ে রোগ সৃষ্টি করে অর্থাৎ সংক্রমিত ওলান ও দূষিত পরিবেশ এ রোগ সৃষ্টি করে।
রোগের লক্ষণঃ
- অতি তীব্র রোগের ক্ষেত্রে দুধ উৎপাদনে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষণীয় হয়। যেমন- দুধ পাতলা ও কিছুটা জমাট বাঁধা হবে।
- ওলান লাল হয়ে ফুলে যায় ও গরম হয়।
- প্রাণি ব্যথা অনুভব করে ও শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
- ক্ষুধামন্দা, অবসাদভাব, জ্বর ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয় ।
- রোগ দীর্ঘস্থায়ী প্রকৃতির হলে দুধের পরিমাণ কমে যায় ও ক্রমাণ্বয়ে দুধ ছানার মত ছাকা ছাকা হয়।
প্রতিকারঃ
✅ অসুস্থ প্রাণিকে সুস্থ প্রাণি থেকে আলাদা রাখতে হবে ।
✅ গোয়াল ঘর সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ।
✅ ঘরের মেঝে সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ সচরাচর দেখা যায় গরু যখন দুধ উৎপাদনের সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকে তখন গরুর বাটের দুগ্ধ গ্রন্থি ফুলে যায়। তাই গরু যখন নোংরা মেঝেতে বসে তখন জীবাণু সেই গ্রন্থি দিয়ে গাভীর ওলানে প্রবেশ করে । তাই গাভীর বাসস্থানের মেঝে পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরী।