গরুর রক্ত আমাশয়

Published by Khamar-e Agro Research Team on

‘আমাশয়’ বলতে আমরা সাধারন ভাবে বুঝি যে এক ধরণের  অ্যামিবা (এক কোষী পরজীবি বা প্যারাসাইট) এবং সিগেলা- এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার ধারা যা প্রাণীর পরিপাকতন্ত্রে বাসা বেঁধে এক পর্যায়ে ঘা বা ইনফেকশনে পরিণত হয় এবং পেটে কামড়ানো সহ মলের সাথে পিচ্ছিল আম অথবা শ্লেষ্মা যুক্ত হয়ে সাথে রক্ত যাওয়া কে আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি বলে। গরুর মধ্যে এ রোগটি মারাত্মক ভাবে বাসা বাধে। তাই আজকে আমরা ” গরুর রক্ত আমাশয় “ এবং এর খুটিনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো-

আলোচনায় যা যা থাকছে –

১. রক্ত আমাশয়ের কারণ 

২. রোগের বিস্তার 

৩. রোগের লক্ষণ

৪. চিকিৎসা এবং 

৫. প্রতিরোধ 

রক্ত আমাশয়ের কারণঃ

আইমেরিয়া নামের এক জাতীয় পরজিবী (ককসিডিয়া) প্রাণির শরীরে বাসা বাধলে তা থেকে এই রােগ হয়। গাভীর চেয়ে সাধারণত বাছুরের মধ্যে এরোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। সময়মত চিকিৎসা করা না হলে বাছুর মারাও যেতে পারে।

রােগের বিস্তারঃ

১। প্রাণির শােবার জায়গাটি নোংরা, স্যাঁতস্যাঁতে কিংবা ময়লা থাকলে সেখানে সহজেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হতে পারে। ফলে এমন অপরিষ্কার পরিবেশে প্রাণি বসবাস করলে সহজেই এই রােগ বিস্তার লাভ করতে পারে।

২। পশুর খাবারের সাথে যদি দুর্ঘটনাবশত কিংবা ভুলক্রমে  গােবর মিশ্রিত হয়ে থাকে তবে পশুতে এই রােগ হয়।

৩। গাভী দােহন করবার সময় ওলান পরিষ্কার না করলে ময়লাযুক্ত ওলানের দুধ খেয়ে বাছুরের এই রােগ হতে পারে।

৪। আক্রান্ত প্রাণির মল দ্বারা দূষিত খাদ্য ও পানি অন্য প্রাণি খেলে এই রােগ হয়।

 

রােগের লক্ষণঃ

১। রক্ত আমাশয় দ্বারা আক্রান্ত প্রাণি রক্ত মিশ্রিত পায়খানা করে এবং অনেক সময় শুধু রক্ত পায়খানা করে। যা এ রোগের প্রধান লক্ষণ।

২। আক্রান্ত প্রাণি পায়খানা করার সময় কােৎ দেয় ও ডাকে।

৩।  লেজের গােড়ায় রক্ত মিশ্রিত গােবর লেগে থাকে। যা দ্বারা সহজেই এ রোগ সনাক্ত করা যায়। 

৪। আক্রান্ত প্রাণি সাধারণত ঘন ঘন পানি পান করে, দেহের তাপ বৃদ্ধি পায় এবং খাবারে অরুচি দেখা দেয়।

রক্ত আমাশয় রোগে আক্রান্ত গরু

রক্ত আমাশয় রোগে আক্রান্ত গরু

চিকিৎসা :

✅ আক্রান্ত বাছুরকে সালফাডিমিডিন বা নাইট্রোফিউরাজোন বা অ্যামপ্রোলিয়াম ঔষুধ দ্বারা চিকিৎসা করলে সম্পূর্ণ ভাল হয়ে যায়।

✅ প্রাণিকে পানি খাওয়ানোর সময় তাতে খাবার স্যালাইন যুক্ত করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। 

 

প্রতিরোধ :

১. গরুর বাসস্থান সর্বদা পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।  স্বাস্থ্য – সম্মত বিধি ব্যবস্থা পালন করতে হবে।

২. বাচ্চা প্রসব ও লালন-পালনের স্থান শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৩. প্রাণির খাদ্য ও পাণীয় মলের সাথে লেগে যেন কোনভাবেই দূষিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৪. ঠাসাঠাসি ভাবে পালন পরিহার করা উচিত।

৫. বাচ্চা পালনের ঘর যথাযথ স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা করতে হবে।