রাইন্ডারপেস্ট
রাইন্ডারপেস্ট রোগের নাম হয়তো আপনাদের অনেকেরই অজানা। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত টিকা প্রদানের মাধ্যমে যে দু’টি রোগ দূরীকরণ করা সম্ভব হয়েছে তার মধ্যে রাইন্ডারপেস্ট একটি। এটি একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ ; যা মূলত গবাদিপশুর (গরু) হয়ে থাকে। কিন্তু এখনো প্রচুর খামারে ( যেসব খামার গবাদিপশুকে নিয়মিত টিকা দেইয়ার গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয় না) এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় ; যার ভয়াবহতা প্রকট।
চলুন এখন বিস্তারিত জেনে নেই এ রোগের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে –
কীভাবে বুঝবেন পশুটি রাইন্ডারপেস্টে আক্রান্ত?
১। জ্বরঃ এ রোগে আক্রান্ত প্রাণির সর্বপ্রথম যে লক্ষণটি দেখা দেয় তা হলো জ্বর। একটানা অনেকদিন পর্যন্ত জ্বর থাকতে পারে এবং এ জ্বরের প্রাদুর্ভাব এক প্রাণি থেকে আরেক প্রাণিতে সংক্রমিত হতে পারে।
২। পানি ঝরাঃ আক্রান্ত পশুর চোখ, নাক মুখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। অনেক সময় সর্দি-জ্বর ভেবে খামারীরা ভুল করে থাকে।
৩। রক্তাভ পর্দাঃ আক্রান্ত প্রাণির নাকের পর্দা রক্তাভ হয়। যা দ্বারা সহজেই এ ভয়াবহ সংক্রামক রোগকে চিহ্নিত করা যায়।
৪। লালা ঝরাঃ প্রাণির মুখ দিয়ে লালা বা শ্লেষ্মা জাতীয় তরল পদার্থ ঝরতে থাকে ।
৫। আমাশয় বা ডায়রিয়াঃ দুর্গন্ধযুক্ত আম ও রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া এ রোগের আরেকটি লক্ষণ।
৬।তাপমাত্রাঃ ভয়াবহ এ রোগে আক্রান্ত প্রাণির অসুখের প্রথম দিকে জ্বর জ্বর অবস্থা থাকলেও পরে আস্তে আস্তে দেহের তাপমাত্রা কমে যায় ও প্রাণি ৭ দিনের মধ্যে মারা যায়।
খামারীরা কীভাবে রাইন্ডারপেস্টের ভয়াবহতা থেকে গবাদিপশুকে রক্ষা করবে?
✅ এটি একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। তাই সহজেই আক্রান্ত প্রাণি থেকে সুস্থ প্রাণিতে এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে। এ কারণে আক্রান্ত প্রাণিকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
✅ টিকা প্রদানে এ রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব। তাই সুস্থ প্রাণিকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে।
✅ গোয়াল ঘর নিয়মিত জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে ।
এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে ভাইরাস জনিত রোগ। আক্রান্ত প্রাণির সংস্পর্শে, শ্বাস-প্রশ্বাস, মলমূত্র, খাদ্যদ্রব্য, পানি, বায়ু দ্বারা সুস্থ গবাদি প্রাণিও আক্রান্ত হতে পারে। তাই গবাদিপশুকে নিয়মিত টিকা প্রদান করতে হবে এবং যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।