দুগ্ধজাত দ্রব্যের গুনগত মান
পুষ্টিগুন ও সুস্বাদু পানীয় হিসেবে দুধ যেমন জনপ্রিয়, তেমনি দুধ থেকে তৈরী বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য ; যেমন – দই, মাখন, ছানা, ঘি ইত্যাদিও স্বাদে ও মানে অতুলনীয় হওয়ায় জনসাধারণের কাছে চাহিদা ব্যাপক। ভোজনরসিক বাঙালীর খাবারের মান ও স্বাদ বহুগুনে বাড়িয়ে দিতে এসব দুগ্ধজাত পণ্যের কোনো তুলনা নেই। যেমনঃ ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের সাথে ঘি এর কোনো জুরি নাই। আবার দই ছাড়া বিয়ে বাড়ি অসম্পূর্ণ। খামার থেকে গরুর খাঁটি দুধ সংরক্ষণ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এসব পণ্য প্রস্তুত করা হয় এবং চাহিদা অনুযায়ী বাজারজাত করা হয়। কিন্তু এসব দুগ্ধজাত পণ্যে কোন পুষ্টিমান কতোটুকু পরিমানে আছে তা জানেন কী?
বাংলাদেশে প্রধান বাই প্রোডাক্টের মধ্যে ক্রিম, দই, মাখন এবং ছানা অন্যতম। এ পণ্যগুলো খামারীরা নিজেরাই খুব সহজে উৎপাদন করতে পারেন । আজকে আমরা বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো –
দই এর পুষ্টিমান
দুগ্ধজাত পণ্য মাখন থেকে মূলতঃ দই প্রস্তুত করা হয়। নিচের ছকে প্রতি ১০০ গ্রাম দই এর পুষ্টিমান বর্ণনা করা হলো –
কার্বোহাইড্রেট
চিনি ফ্যাট স্যাচুরেটেড ফ্যাট মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রোটিন রিবোফ্লাভিন (বি২) ক্যালসিয়াম |
৪.৭ গ্রাম
৪.৭ গ্রাম ৩.৩ গ্রাম ২.১ গ্রাম ০.৯ গ্রাম ৩.৫ গ্রাম ০.১৪ মি.গ্রা. ১২১ মি.গ্রা. |
ঘি এর পুষ্টিমানঃ পাত্রে গোদুগ্ধ সরবরাহেট পর অনবরত জাল দেয়ার মাধ্যমে ঘি প্রস্তুত করা হয়। নিচের ছকে প্রতি ১০০ গ্রাম ঘি এর পুষ্টিমান বর্ণনা করা হলো –
মিল্ক ফ্যাট
জলীয় অংশ ক্যারোটিন, টকোফেরল, এবং ফ্রি ফ্যাটি এসিড |
৯৯%- ৯৯.৫%
০.৫%এর উপরে নয় খুবই নগণ্য পরিমাণে |
ক্রিম এর পুষ্টিমান
ক্রিম সেপারেটর মেশিনে দুধ সরবরাহের পর সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্সের কারণে তরল দুধ থেকে ক্রিম কে আলাদা করে সংগ্রহ করা হয় মজাদার ক্রিম। নিচের ছকে প্রতি ১০০ গ্রাম ক্রিম এর পুষ্টিমান বর্ণনা করা হলো –
পানি
ফ্যাট প্রোটিন শর্করা খনিজ পদার্থ |
৪৫.৪৫%
৫০% ১.৬৯% ২.৪৭% ০.৩৭% |
মাখন এর পুষ্টিমান
দুগ্ধজাত পণ্য ক্রিমকে চার্নিং মেশিনে বিভিন্ন প্রক্রিয়াধীনের মাধ্যমে মাখন প্রস্তুত করা হয়। নিচের ছকে প্রতি ১০০ গ্রাম মাখন এর পুষ্টিমান বর্ণনা করা হলো –
ফ্যাট
জলীয় অংশ লবণ ফ্যাট ছাড়া সলিড অংশ |
৮০.২%
১৬.৩% ২.৫% ১% |
দুগ্ধজাত পণ্য খামারীদের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস। খুব সহজেই এসব পণ্য প্রস্তুত করে খামারীরা বাজারজাত করতে পারে। আবার অনেকসময় দুধ সময়মতো বাজারজাত করতে না পারলে বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য প্রস্তুত করে সংরক্ষণ করা যায়। এতে করে অপচয় রোধ করা সম্ভব তথা ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করা সক্ষম হয়। গ্রামের মানুষ সহজেই খাঁটি গোদুগ্ধ সরবরাহ করতে পারলেও শহুরে জনগণের কাছে ইহা অনেকটাই দুর্বিষহ। তাই বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে তাদের আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।